logo

প্রামাণ্যচিত্রকর দাই সিল কিম-গিবসন

ট্যামি কিম লেখালেখি করেন, সামাজিক ন্যায়বিচারবিষয়ক আইনজীবী এবং কুপার ইউনিয়নের সহকারী অধ্যাপক। বর্তমানে  ব্রুকলিনে বসবাসরত এই লেখিকা পড়াশোনা করেছেন ইয়েল ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে।

শিল্প ও রাজনীতির মোড়ে যাঁরা ঘোরাফেরা করেন তাঁদের কাছে তাহরির চত্বর থেকে ম্যাডিসনব্যাপী বিশ্বজুড়ে অভ্যুত্থানের এই মুহূর্ত যথেষ্ট সাড়া দাবি করে। একটা ছোট্ট কবিতা যখন অন্তর্জালে পৃথিবী ভ্রমণ করছে আমি তখন ভাবছিলাম শিল্পীর ভূমিকার কথা। তামিম আল-বারগাউতির ‘মিশর, এসে গেছে ওই দেখ’ সেই সুন্দর মিথ্যাকে জানান দেয়? ‘প্রজাকুলের স্বপ্নে আজ মিলেছে স্বৈরাচারীর শেষ ঠাঁই।’ কিন্তু তার ঠিক আগের চরণে বক্তা বাস্তবের দিকে একবার তাকিয়ে নিতে বলেন : ‘চত্বরে এস, দেখে নাও একবার।’

বাস্তবের বর্ণনা, একই সঙ্গে তার অতিক্রমণ এ সহজ কাজ নয়। এ কারণেই ভালো প্রামাণ্যচিত্র তৈরি এত কঠিন, অন্তত আমার দৃষ্টিতে। এ বছরের শুরুতে নিউইয়র্কে দাই সিল কিম-গিবসনের ছবিগুলো দেখতে পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি তাই। ব্যক্তির নিজের সূক্ষ্ম গল্পের ভেতর দিয়ে পৃথিবীর ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো কীভাবে উন্মোচিত হয় ছবিগুলো তা মনে করিয়ে দেয়।

মার্চের ১৭ থেকে ২০ তারিখে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে হয়ে গেল অতীব জরুরি এক অনুষ্ঠান। কোরীয়-মার্কিন চলচ্চিত্র উৎসব। কিম-গিবসনের ছয়টি প্রামাণ্যচিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছিল এবারের উৎসব। এগুলোর দুটি সা-আই-গু (১৯৯৩) এবং ওয়েট স্যান্ড : ভয়েস ফ্রম এলএ (২০০৪) লস অ্যাঞ্জেলেসে সংঘটিত দাঙ্গার ওপর, দুটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শিকার যেসব মানুষ পরবর্তীকালেও রাষ্ট্র ও সমাজের অবহেলার শিকার হয়েছেন তাঁদের ওপর – আ ফরগট্ন পিপ্ল : দ্য সাখালিন কোরিয়ানস (১৯৯৫) ও সাইলেন্স ব্রোকেন : দ্য কোরিয়ান কমফোর্ট উইমেন (১৯৯৯), চার্লস বার্নেট পরিচালিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি অলিভিয়াস স্টোরি (১৯৯৯) এবং কিম-গিবসনের সর্বসাম্প্রতিক কাহিনিচিত্র মাদারল্যান্ড : কিউবা, কোরিয়া, ইউএসএ (২০

ADD_CONTENT_HERE

০৬)। তাঁর প্রথম ছবি আমেরিকা বিকামিং (১৯৯১) যেটি বানানো হয়েছিল বিভিন্ন দেশের মানুষের যুক্তরাষ্ট্রে আগমন এবং জাতিসম্পর্কের ওপর, এপ্রিলে মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্টে দেখানো হবে কিম-গিবসনের দীর্ঘকালের সহযোগী বার্নেটের প্রথম ছবি কিলার অফ শিপ (১৯৭৭)-এর সঙ্গে।   

কিম-গিবসন নিজেকে অধিকারকর্মী ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্রকার বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। একই সঙ্গে মাইকেল মুরকে এই কর্মধারার বিপরীত প্রান্তের মানুষ বলে মনে করেন। নিজের চলচ্চিত্রে তিনি চান চরিত্রগুলো নিজেদের কথা নিজেরাই বলুক এবং বেদনার মধ্য দিয়ে তাদের যে যাত্রা তার মাত্রাগুলোকে নিজেরাই প্রকাশ করুক। সে কারণেই আমি যখন তাঁর প্রামাণ্যচিত্র দেখে ফিরি তখন আমার মনে প্রশ্নের জন্ম হতে থাকে, ছবির চরিত্রগুলোর নাম আর কাহিনির কথা আলাদা করে আমার মনে থাকে। তাঁর ক্যামেরার কাজ সতর্ক-সংযত এবং সৎ, সংগীতের ব্যবহার স্বাভাবিক লয় ও সামঞ্জস্য রক্ষা করে। তাঁর ছবির আরেক অনিবার্য দিক স্থানের উপস্থিতি। সাখালিন দ্বীপপুঞ্জের কুয়াশাবৃত পাহাড় কিংবা লস অ্যাঞ্জেলেসের দাঙ্গাবিধ্বস্ত বিল্ডিং, দর্শককে তা স্বভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

[চলচ্চিত্রবিষয়ক অনলাইন পত্রিকা সেন্সেস অব সিনেমার ৫৯ নম্বর সংখ্যায় এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।

দাই সিল কিম একজন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা – জন্মেছিলেন কোরিয়ার উত্তরাংশে ১৯৩০-এর দশকের শেষের দিকে, যখন দেশটি জাপানের দখলে ছিল। ১৯৪৫ সালে সীমান্ত পেরিয়ে পরিবারের সঙ্গে দাই সিল কিম দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে আসেন। সিউল থেকে ১৯৬২ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান এবং সেদেশে পড়াশোনা করেন। পিএইচডি করেন ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে এবং বিয়ে করেন ডোনাল্ড ডি গিবসনকে।

দাই সিল কিম-গিবসন এ পর্যন্ত পাঁচটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে দুটি সা-আই-গু (১৯৯৩) এবং ওয়েট স্যান্ড : ভয়েস ফ্রম এলএ (২০০৪) নির্মিত হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের দক্ষিণ-মধ্য অংশে ১৯৯২ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত সংঘটিত ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ওপর।  গণমাধ্যমে লস অ্যাঞ্জেলেস দাঙ্গাকে তখন কোরীয়-মার্কিন এবং আফ্রো-মার্কিন এ দুই জনগোষ্ঠীর সংঘাত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে দাই সিল কিম-গিবসন প্রামাণ্যচিত্র সা-আই-গু এবং ওয়েট স্যান্ড : ভয়েস ফ্রম এলএ, বিশেষ করে সা-আই-গু নির্মাণ করেন।

দ্য সাখালিন কোরিয়ানস : আ ফরগট্ন পিপ্ল (১৯৯৫) দাই সিল কিম-গিবসন নির্মিত অন্য একটি প্রামাণ্যচিত্রের নাম। এই ছবিটির নির্মাতা সাখালিন দ্বীপপুঞ্জে বসবাসরত সেইসব কোরীয়র কাহিনি বর্ণনা করেছেন যাঁদের জাপানি সেনাবাহিনী কোরিয়ার মূল ভূখন্ড থেকে জোর করে ধরে এনেছিল শ্রম দেওয়ার জন্য। সে-সময়ে কোরিয়া জাপানের দখলে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে সাখালিন দ্বীপ সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলে চলে যায় এবং এরপর এই মানুষগুলো আর মূল ভূখন্ডে স্বজনের কাছে ফিরতে পারেননি।

কমফোর্ট উইমেন (১৯৯৯) দাই সিল কিম-গিবসনের চতুর্থ ছবি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান কর্তৃক অধিকৃত কোরিয়ায় সেদেশের যেসব নারী জাপানি সৈন্যদের বিনোদন উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিলেন তাঁদের নিয়ে নির্মিত। এ ছবিটি কোরিয়ায় তখনো পর্যন্ত সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ

একটি বিষয় নিয়ে আলোচনার দুয়ার খুলে দিয়েছিল, যার জন্য

নির্মাতা কোনো কোনো মহলের কাছে তিরস্কৃত হলেও অন্যদের কাছে প্রশংসিত হয়েছিলেন।  তাঁর শেষ ছবি

মাদারল্যান্ড (২০০৬) কিউবায় বসবাসরত কোরীয় জনগোষ্ঠীকে নিয়ে নির্মিত। – অনুবাদক]১

দাই সিল কিম-গিবসনের সাক্ষাৎকার

ট্যামি কিম : নিউইয়র্কে আপনার চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

দাই সিল কিম-গিবসন : একটা মিশ্র অনুভূতি হয়েছে আমার। আমাকে ঘিরে চারপাশের এই আলোড়ন দেখে বেশ অস্বস্তিই হচ্ছে। আমি তো অভ্যস্ত অন্যকে প্রশ্ন করে আর মানুষের গল্প উপস্থাপন করে; নিজেকে বিষয়বস্ত্ত করে তোলায় আমার যারপরনাই অনাগ্রহ। এজন্য আমার বানানো ছবিগুলোতে আমার কণ্ঠও খুব কম শুনতে পাবেন আপনি। নিজেদের শেকড় অনুসন্ধান আমাদের জরুরি এক প্রয়োজন কিন্তু একই সঙ্গে ‘কোরীয়-মার্কিন চলচ্চিত্র উৎসব’ নামের মধ্যে যে রাজনৈতিক বিবৃতিটি আছে সেটা যে এখনো আমাদের জারি রাখতে হচ্ছে সেটাই আমাকে ব্যথিত করে। আমি এমন এক মার্কিন সমাজের স্বপ্ন দেখি, যেখানে এ-ধরনের উৎসব প্রাথমিকভাবে একটি ইতিবাচক অভিব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে, প্রয়োজন হিসেবে নয়।

ট্যামি কিম : আপনার মুখ থেকে একথা শোনার বিশেষ তাৎপর্য আছে বলেই মনে হয় কারণ আপনার অনেকগুলো ছবির বিষয় প্রবাসী কোরীয়দের জীবন। প্রবাসী কোরীয় হিসেবে এ বিষয়টিকে চলচ্চিত্রে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে কি কোনো দায়িত্ব বোধ করেছেন? নাকি এটা শুধুই কোরীয় ভাষা জানার সুবিধাকে কাজে লাগানো বা অন্য কোনো কিছু?

দাই সিল কিম-গিবসন : অ-কোরীয় ছবি আমি বানাতেই পারতাম। হয়তো সেটা করতামও, যদি আমার স্বামী ডন আজ বেঁচে থাকতেন এবং যদি আমার আরো শক্তি থাকত। কিন্তু আমি কোরীয় বিষয়ের ওপর ছবি নির্মাণে ব্রতী হয়েছি এই কারণে যে, আমার মনে হয়েছে বিষয়গুলো তুলে ধরা জরুরি এবং সেটা করার জন্য আরো অনেকের চেয়ে আমার সামর্থ্য বেশি, সেটা করার মতো পরিস্থিতিও আমার আছে। বিষয়গুলো, মানুষ এবং ইতিহাস শুধু যে আমি মগজ দিয়ে বুঝি তা না, এগুলো আমার হাড়-মজ্জায় মিশে আছে। আর সবচেয়ে বড় কথা কোরীয় বিষয়বস্ত্ত মানুষেরই বিষয়, এর বাইরে আর কী কথা থাকে? অবহেলিত মানবজমিন নিয়েই আমার কারবার।

ট্যামি কিম : এটি আগের সাক্ষাৎকারগুলোতে বলা আপনার সেই কথার প্রতিধ্বনি যে আপনার বিষয়বস্ত্তই আপনাকে নির্বাচিত করে, আপনি বিষয়বস্ত্ত নির্বাচন করেন না। কেন এসব বিষাদক্লিষ্ট ঘটনাগুলোই আপনাকে ‘বেছে’ নেয়?

দাই সিল কিম-গিবসন : কোরীয় যুদ্ধের সন্তান আমি। আমার জীবনে সে ঘটনা স্থায়ী ছাপ রেখে গেছে কারণ ১৯৫০ সালে যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ১২। সে বছর জুলাই মাসে আমাদের বাড়িতে বোমা পড়ল। আমি ভেবেছিলাম, সেই বোমার শেলের টুকরার আঘাতে আমার ভাই মারা যাবে। ছোট্ট এক মেয়ে আমি মৃতদেহের পর মৃতদেহ পেরিয়ে ভাইয়ের জন্য ডাক্তার খুঁজে বেড়ালাম। আমি তখন রোবরারের স্কুলে৪ একনিষ্ঠ ছাত্রী, ফলে আমাকে যখন শয়তানের বিকট সেই রূপ আর বন্ধুদের মৃত মুখ দেখতে হলো তখন আমি

ভাবলাম, ‘কী করে একজন সর্বব্যাপী, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এটা ঘটতে দিলো?’ এটা আমাকে একেবারে আচ্ছন্ন করে ফেলল এবং এ প্রশ্নের এমন কোনো উত্তর কেউ আমাকে দিতে পারল না যা নিয়ে আমি বাঁচতে পারি। এই সংকট আমাকে ধর্ম নিয়ে পড়াশোনার দিকে ঠেলে দিলো। তারপর পিএইচডি করলাম, কেটে গেল আরো বহু বছর, অবশেষে আমি বুঝলাম প্রশ্নটাকে ছেড়ে দেওয়াই ভালো। কিন্তু আমি গরিব মানুষ, নিপীড়িত মানুষ নিয়ে আমার কাজ চালিয়ে গেলাম। ছবি পরিচালনা এসব বিষয়ে আমার নিবিড় ভাবনা আবার শিল্পের প্রতি আগ্রহ এই দুয়ের মেলবন্ধন ঘটাতে সাহায্য করেছে। তাছাড়া পিএইচডির পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ থেকে ভালো প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে ধারণাগত যেসব উপকরণ দরকার হয় সেগুলোর অনেকটা পেয়েছি। গবেষণা ও ধারণাগত উপকরণ ছাড়া ভালো প্রামাণ্যচিত্র বানানো সম্ভব বলে যাঁরা মনে করেন তাঁরা গুরু ভাবেন।

ট্যামি কিম : প্রামাণ্যচিত্র কেন আপনার জন্য সঠিক মাধ্যম এবং আজকের দিনে প্রামাণ্যচিত্রের ভূমিকা কী বলে আপনি মনে করেন?

দাই সিল কিম-গিবসন : ফিল্ম তৈরির ব্যাপারটা সাধারণভাবে আমার জন্য স্বস্তিকর। কারণ পরিচালক, প্রযোজক ও লেখক হিসেবে আপনাকে জানতে হয় ঠিক কোন জিনিসটা আপনি চান, আবার ফিল্ম একটা দলগত কাজও বটে। এর জন্য আপনাকে মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হয় এবং আমি অন্যের কাছে শিখতে ভালোবাসি। অনেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘ছবি তৈরির প্রশিক্ষণ ছাড়া আপনি এ কাজ করেন কীভাবে?’ আমি উত্তর দিই, ‘প্রশ্ন করে করে আর অন্যদের মেধার ওপর ভর করে। প্রামাণ্যচিত্রের আসল দায়িত্ব ধর্মতত্ত্ববিদ পল টিলিচের ভাষায় যদি বলি? দর্শকের সামনে বাস্তবকে হাজির করা ‘এটি বাস্তবে যেমন ঠিক সেভাবেই’ এবং ‘এটি যেমনটা হওয়া উচিত সেভাবে।’ একটি ভালো প্রামাণ্যচিত্র দর্শকের মনে এমন একটা স্থায়ী ছাপ রাখবে যার রেশ তিনি প্রেক্ষাগৃহ বা প্রদর্শনকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসার বহু পরেও রয়ে যাবে।

ট্যামি কিম : আপনার কাজ সম্পর্কে আমি প্রথম জানতে পারি ‘বিনোদন নারী’ নিয়ে করা সাইলেন্স ব্রোকেন দেখে। কিন্তু আ ফরগট্ন পিপ্ল : দ্য সাখালিন কোরিয়ানস  সৌন্দর্য বিবেচনায় আপনার সফলতম ছবি।

দাই সিল কিম-গিবসন : যদি চলচ্চিত্রের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখি তবে? হ্যাঁ। যতগুলো ছবি এ পর্যন্ত তৈরি করেছি তার মধ্যে এ দুটোই আমাকে একদম ভেতর থেকে নিংড়ে নিয়েছে। এ দুটি ফিল্মের চরিত্রগুলো আমার বোন, ভাই এবং সম্ভবত মা-বাবাও। কোরিয়ায় জন্ম নেওয়ার কারণে, মানুষ হয়ে জন্মানোর কারণে মাতৃভূমির বেদনার্ত নিয়তির শিকার তাঁরা, একই সঙ্গে শিকার মানুষের লোভ, বিশেষ করে ক্ষমতাধর নিপীড়কদের লালসা যে করুণ নিয়তি বয়ে আনে তারও। যে যন্ত্রণায় দীর্ণ হয়েছেন তাঁরা আমাকে তা ক্লিষ্ট করেছে। ছবি দুটো ইতিহাস আর ধারণার দিক দিয়ে অনেক আলাদা হলেও পরস্পর সম্পর্কিত। কারণ দুটোর মধ্যেই জাপান কর্তৃক জোরপূর্বক শ্রমের বিষয়গুলো এসেছে।

ট্যামি কিম : ছবিতে আপনি শব্দ ও সংগীত নির্বাচন করেন কীভাবে? আমার বিশেষ আগ্রহ ঐতিহ্যগত যে কোরীয় সংগীত ব্যবহার করেন তার প্রতি।

দাই সিল কিম-গিবসন : আপনি যদি কোরিয়ায় জন্ম হয়েছে এমন কোনো ছবি বানিয়ে হন তবে কোরীয়দের পুঞ্জীভূত বেদনা ও ক্ষোভের কথা আপনি জানবেন যার উৎস ইতিহাসের গভীরে, যার জন্য তারা নিজেরা দায়ী নয়, দায়ী ওই ক্ষমতাধর ও লোভী শ্রেণি। যে কোরীয় সংগীত আমি ব্যবহার করি তা হোয়াং বাইয়ুং কি রচনা করেছেন। ভদ্রলোক ছিলেন উকিল, হয়ে গেছেন সংগীত পরিচালক। যে বিষয়গুলোর কথা বলছিলাম তার সবকিছুই এই শিল্পীর সৃষ্টির মধ্যে উপস্থিত এবং তিনি অনুগ্রহ করে আমাকে তাঁর সংগীত ব্যবহার করতে দিয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে এখানে আ ফরগট্ন পিপ্ল-এর কথা বলতে পারি। অন্য যে মৌলিক সংগীত আমি ব্যবহার করেছি ওয়েট স্যান্ড ছবিতে তা আফ্রো-মার্কিন সংগীতস্রষ্টা স্টিফেন টেলরের। চার্লস বার্নেটের সব ছবির সংগীত পরিচালক ইনি। মানুষের সকল বেদনার কথা তিনি জানেন এবং তাঁর সংগীত মানবীয় সংঘাতের এসব বেদনার্ত গল্পের সঙ্গে নিখুঁত খাপ খেয়ে যায়। মনে কষ্ট হলে আপনি যখন কাঁদবেন তার যে আওয়াজ চলচ্চিত্র এমন স্বাভাবিক শব্দানুষঙ্গই দাবি করে। কিন্তু শব্দের মধ্যে যে নৈঃশব্দ্য তার জোর অধিকাংশ সময় উচ্চারিত শব্দের চেয়ে বেশি।

ট্যামি কিম : আপনি যে গল্পগুলো বলেছেন সেগুলো সম্পর্কে গড়পড়তা কোরীয়রা খুব সাগ্রহে আলোচনা করবেন এমন না। এগুলো এমন কাহিনি যা তাঁরা আলমারিতে তালাবদ্ধ রাখতেই পছন্দ করবেন। ফলে আপনার কাজ লজ্জা ও ইতিহাসের স্মৃতিভ্রংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে বলে মনে হয়।

দাই সিল কিম-গিবসন : আপনি যা বললেন তার একটা উপযুক্ত উদাহরণ দিচ্ছি। যখন ‘বিনোদন নারী’ নিয়ে ছবিটা করলাম আমার ধারণা ছিল আমার প্রজন্মের লোকদের থেকে বিরাট সমর্থন পাব, কিন্তু তাঁরা একেবারেই মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তাঁরা বললেন, ‘সেই চরম লজ্জা কেন আবার তুলে নিয়ে আসা?’ ‘বিনোদন নারী’ নিয়ে তৈরি ছবি আর বই (এরও নাম সাইলেন্স ব্রোকেন) দুয়ের জন্যই সমর্থন এলো দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের কোরীয়-মার্কিনদের কাছ থেকে আমাকে যা সত্যিকারের আশা জুগিয়েছে।

ট্যামি কিম : আপনার সাম্প্রতিকতম ছবি মাদারল্যান্ড যেটি কিউবায় বসবাসরত এক কোরীয় মহিলাকে নিয়ে করা হয়েছে, তার শুরু কীভাবে হলো একটু বলবেন? আমি পড়েছিলাম আমেরিকার ব্যাপারস্যাপার নিয়ে বীতশ্রদ্ধ হয়ে আপনি কিউবায় গিয়েছিলেন।

উত্তর : বুশ যখন রাষ্ট্রপতি, তাঁর দুই মেয়াদকালেই আমি এই দেশ ছেড়ে প্রায় চলেই যেতে চেয়েছিলাম। কিউবায় গিয়ে আমি আসলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে আমার অনুভূতিগুলোকে খতিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম। ওখানে কাস্টমস চেকিংয়ের সময় এক কর্মী আমাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘আপনি এখানে কেন?’ আমি বললাম, ‘জর্জ বুশের কবল থেকে উদ্ধার পেতে এসেছি।’ লোকটি হো হো করে হেসে আমার দিকে হাত নাড়ল। কিউবায় গিয়েছিলাম প্রথমত দ্বীপটা দেখতে, দেখতে যে একটা সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে তারা কেমন করছে কারণ যে যাই বলুক প্রশংসা না করে উপায় নেই যে অত ছোট একটা দেশ অত বছর ধরে তার সাম্রাজ্যবাদী পড়শির বিরুদ্ধে কাঁধ সোজা করে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আমি যখন মার্থার দেখা পেলাম? যাঁকে ঘিরে ছবিটা আবর্তিত হয়েছে? সেই সঙ্গে যখন কিউবার অন্য কোরীয়দের সঙ্গেও দেখা হলো যাদেরকে দেখে মনে হয়েছিল তারা যেন বিপ্লবের সৈনিক, আমার সূর্যস্নানের ইচ্ছা তিরোহিত হলো। কিউবার ক্যামেরাম্যান আর শব্দযন্ত্রী ভাড়া করলাম। পাঁচ দিনেরও কম শুটিং করতে পেরেছিলাম, ইচ্ছা ছিল ফিরে গিয়ে আবারও শুটিং করব। যতটা দরকার ছিল তার চেয়ে ফুটেজ অনেক কম পেয়েছিলাম কিন্তু আমার তখন এমন মরিয়া দশা যে ওই ফুটেজ থেকেই মাদারল্যান্ড : কিউবা, কোরিয়া, ইউএসএ বানাতেই হবে! ওবামার নির্বাচনী প্রচারণা আমার স্বামী আর আমাকে, আমাদের দুজনকেই যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে গভীর হতাশা থেকে টেনে তুলল। আমরা ওবামার নির্বাচিত হওয়া নিয়ে এত উত্তেজিত ছিলাম কিন্তু ওবামার অভিষেকের তিনদিন আগে ডন চলে গেল। জানি না বেঁচে থাকলে ও কীভাবে বিষয়টাকে দেখত কিন্তু ওবামার ব্যাপারে আমি হতাশ। তাঁকে এখনই কিছু করার চেয়ে নিজের দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়া নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন মনে হয়েছে, যার জন্য তিনি দ্বিদলীয় পন্থার নামে একটা মধ্যপন্থী অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের যা দরকার তা হচ্ছে একজন ঐতিহাসিক রাষ্ট্রপতি যিনি খাড়া দাঁড়িয়ে বলতে পারবেন, ‘ঠিক আছে, আমিই করব, বাকি সব জাহান্নামে যাও।’

ট্যামি কিম : আমি অবশ্য খুব একটা হতাশ নই কারণ মূলধারার রাজনীতি থেকে খুব একটা আশা করি না আমি। কিন্তু কালো এক মানুষ আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব করছে এটার একটা তাৎপর্য তো আছেই? তাছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেস দাঙ্গা নিয়ে ছবি বানানোর প্রায় দশ বছর পরে আমেরিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে আপনি এখন কীভাবে দেখেন?

দাই সিল কিম-গিবসন : নির্বাচনের আগে জাতি সম্পর্ক বিষয়ে ওবামার দৃষ্টিভঙ্গিকে আমার আনাড়ি মনে হতো। লস অ্যাঞ্জেলেস দাঙ্গার পরে পরেই সেটা নিয়ে তৈরি ছবি (সা-আই-গু) এবং তার দশ বছর পরে তৈরি আরো একটা ছবির (ওয়েট স্যান্ড) পরিচালক হিসেবে আমি ভেবেছিলাম, ‘নাঃ, এই লোকটার সঙ্গে আমার যাবে না।’ আমি যে ঠিকই ভেবেছিলাম সেটা প্রমাণিত হয়েছে। ওবামা কালো? এটা নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারে কারণ এটা আমেরিকা যে অগ্রসর হয়েছে তার একটা লক্ষণ? কিন্তু নিজের মেয়াদকালটাকে ওবামা ঐতিহাসিক করে তুলতে পারতেন। তাছাড়া বর্ণবিদ্বেষ তো যায়নি। কোনো কোনো দিক থেকে বরং আরো খারাপ হয়েছে বিশেষ করে এজন্য যে বর্ণবিদ্বেষ এখন অপ্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। এর অস্তিত্ব এখন আপনার মনের ভেতরে, মাটির নিচে, দমিত এবং অভিব্যক্ত হচ্ছে ভিন্নভাবে। লস অ্যাঞ্জেলেস নিয়ে আমার দুই ছবি এবং অলিভিয়াস স্টোরি এসবেরই মূল উপজীব্য জাতি ও বর্ণবিদ্বেষ। সা-আই-গু বানানোর কারণ মূলধারার গণমাধ্যমে দাঙ্গাকে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছিল তা দেখে আমি রাগে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম এবং দাঙ্গার কারণ হিসেবে কালো-কোরীয় সংঘাতকে যে তুলে ধরা হচ্ছিল তা সঠিক ছিল না। ওটা কারণ ছিল না কোনোভাবেই, ওটা ছিল একটা লক্ষণ মাত্র।

ট্যামি কিম : সেজন্যই উৎসবে আপনার আর লেখক-পরিচালক চার্লস বার্নেটের সঙ্গে ‘লস অ্যাঞ্জেলেস দাঙ্গা : ফিরে দেখা ১৯ বছর পর’ শীর্ষক যে আলোচনা হয়েছিল সেটার ব্যাপারে এত আগ্রহী ছিলাম।

দাই সিল কিম-গিবসন : চার্লস নম্র আত্মার মানুষ। আমি খুশি যে মিসেস লি আলোচনায় সেদিন উপস্থিত ছিলেন, যিনি এডওয়ার্ড নামে যে আফ্রো-মার্কিন কিশোরটি দাঙ্গায় নিহত হয়েছিল তার মা।

ট্যামি কিম : শুনছি পরের প্রামাণ্যচিত্রটি আপনি উত্তর কোরিয়া নিয়ে করার চিন্তা করছেন।

দাই সিল কিম-গিবসন : উত্তর কোরিয়া নিয়ে যেসব ছবি আছে তার সবটাতেই উত্তর কোরিয়াকে উদ্ভট পাগল এক দেশ আর শয়তানির গোড়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর নাগরিকদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারা খেলার পুতুল, যাদের নিজস্ব চিন্তা বলতে কিছু নেই। সাম্প্রতিককালে অন্যরকম কিছু ছবি হয়েছে, যেগুলো ওই দেশ থেকে পালিয়ে আসা ভিন্নমতাবলম্বীদের নিয়ে বানানো হয়েছে। কিন্তু দেশটির নাগরিকরা তো মানুষ ভিন্ন কিছু না। আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে বেশ চেষ্টাটেষ্টার পর জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে একবার দুপুরের খাবার খেয়েছিলাম। সেখানে আমি তাঁর কাছে উত্তর কোরিয়ায় আমার নিজের শহরে যাওয়ার অনুমতি চাই। মাস দুয়েক পর একটা বার্তা এলো, তাতে লেখা ‘পারমিশন ডিনায়েড’ (অনুমতি দেওয়া হলো না)। আমি ভাবতে থাকি, ‘পারমিশন ডিনায়েড’ সহজেই একটা নাম হতে পারে (ছবি বা বইয়ের)। যেটা আমি করতে চেয়েছি কাংগোন প্রদেশের ডিএমজেডে৫ গিয়ে, সেখানে উত্তর কোরিয়ার দিকে চেয়ে আমি বলতে চেয়েছি, ‘দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হলো না।’ তারপর সেখান থেকে চীন সীমান্তে গিয়ে উত্তর কোরিয়ার দিকে তাকিয়ে বলতে চেয়েছি, ‘এই যে রাজধানীর দিকে আমি চেয়ে আছি, তার নিচের অংশটি আমার নিজের শহর হতে পারত। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হলো না।’

ছবিটার উদ্দেশ্য উত্তর কোরিয়াকে আঘাত করা নয়। কিন্তু একটা ধারণা হিসেবে, একটা বাস্তব ঘটনা হিসেবে এটা করা হবে। কেন কোরীয় উপদ্বীপের এই করুণ পরিণতি যে অনুমতি দেওয়া হবে না? দৃশ্যবৈশিষ্ট্যের বিচারে আমার আর সব ছবিতে যা করেছি এখানেও তাই করব, আর্কাইভ থেকে প্রচুর ফুটেজ ব্যবহার করা হবে এবং আশা করছি আমার নিজের শহরের ছবিও সেখানে থাকবে।

কোরিয়া যুদ্ধের সময়, আমার বয়স যখন ১২, মার্কিন সেনাদের স্বর্গের দেবদূত মনে হতো। ভাবতাম ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করার জন্য তাদের পাঠিয়েছেন। বড় হওয়ার পর আমার এটাই মেনে নিতে সবচেয়ে কষ্ট হয়েছে যে, কোনো এককালে আমার এরকম একটা বিশ্বাস ছিল। কী ভীষণ ভুলই না ছিল সেই মনে হওয়া। ১৯৪৫ সালে আর কোরিয়া যুদ্ধে আমেরিকার ভূমিকা কী জঘন্যই না ছিল! আমার যা মনে হয় ইরাক, আফগানিস্তান আর অন্যান্য জায়গায় একই জিনিসেরই পুনরাবৃত্তি ঘটছে আরো খারাপভাবে। আমেরিকা যদি কোরিয়ার মানুষের প্রতি মনোযোগ দিত, কোরীয় জনগণ কী চায়, কী তাদের প্রয়োজন তা যদি বুঝত? এক বিশাল ‘যদি’ এটা? আমার বিশ্বাস কোরিয়া ভাগ হতো না। যদি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কোরিয়াকে নিজস্ব পন্থার সমাজতন্ত্রের দিকে যেতে দিত তাহলে আমরা একটাই দেশ থাকতাম। উত্তর কোরিয়া নিয়ে ছবিটাতে আমি এটাই বলতে চাই।

একুশ শতক সম্পর্কে আমার একটা দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে। এ শতক হবে গণ-দেশান্তরের শতক যখন কোনো পরাশক্তি বা জাতীয়তাবাদের অস্তিত্ব আর থাকবে না। জন্মভূমি আর দেশ থাকবে না (অর্থাৎ যে ধারণা থেকে আমরা জন্মভূমি আর দেশকে এক করে দেখি সেই ধারণা আর কার্যকর থাকবে না)। অতীতে মানুষ যাযাবর ছিল, তাদের ঠিকানা ছিল তাদের হৃদয়ে, কোনো নির্দিষ্ট স্থানে তা ছিল না। আমরা সে জায়গাতেই ফিরে যাব। হ   

ভাষান্তর : প্রিসিলি রাজ

 

তথ্যসূত্র

১.  বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে।

২.  মিশরের তাহরির স্কয়ার যা ‘মিশর অভ্যুত্থান ২০১১‘-এর জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পেয়েছে। মিশরের রাজধানী কায়রোর কেন্দ্রীয় এলাকার বিশাল একটি চত্বর এটি। এখান থেকেই দেশটির রাষ্ট্রপতি হোসনি মোবারকের ৩০ বছরব্যাপী শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য গণআন্দোলন শুরু হয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২৫ জানুয়ারি এখানে প্রায় ৫০,০০০ মানুষ জমায়েত হয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করে। জমায়েতে জড়ো হওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে কয়েক লাখ হয়ে যায়। ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে হোসনি মোবারক ক্ষমতা ছাড়েন। উৎস : http://en.wikipedia.org/wiki/Tahrir_Square দেখা হয়েছে ২ অক্টোবর ২০১১।

৩.  ম্যাডিসন বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন অনুবাদকের তা বোধগম্য হয়নি। কেননা আমেরিকায় ম্যাডিসন নামের অনেক জায়গা আছে। তবে হতে পারে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ারকে বোঝাতে চেয়েছেন, যেটি একটি বৃহৎ চত্বর এবং যেখানে একটি বড় পার্ক রয়েছে।

৪.  কিছু কিছু চার্চে প্রতি রবিবার শিশুদের জন্য খ্রিষ্ট ধর্ম বিষয়ে শিক্ষার আয়োজন করা হয়। একে রোববারের বিদ্যালয় বা সানডে স্কুল বলা হয়।

৫.  korean demilitarized zone (DMZ) একটি সরু ভূখন্ড, যা কোরীয় উপদ্বীপকে মোটামুটি দুভাগে ভাগ করেছে এবং যা দুই কোরিয়ার মধ্যে একটা বাফার জোন বা নো ম্যানস ল্যান্ড হিসেবে কাজ করে। প্রায় ২৫০ কিলোমিটার লম্বা ও চার কিলোমিটার চওড়া ডিএমজেড ভূখন্ড। এ সীমান্তে দুই পক্ষেরই যুদ্ধসাজ পৃথিবীর যে-কোনো সীমান্তের চেয়ে বেশি।

Leave a Reply