আ ন্দা লি ব রা শ দী
‘আমার বেলায় ভাস্কর্য আমার শরীর।
আমার শরীরই আমার ভাস্কর্য।’
-লুইস বুর্জোয়া
গত একশ বছরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর লুইস জোসেফিন বুর্জোয়ার কাজের জন্য বিষয়ের কোনো অভাব হয়নি – আত্মজীবনীর চেয়ে বড় কোনো বিষয়ের অনুসন্ধানও তিনি করেননি। সুতরাং নিজের শৈশব, নৈঃসঙ্গ্য, উদ্বেগ এবং বিশ্বাসভঙ্গের বঞ্চনা নিজের মতো করে নির্মাণ এবং পুনর্নির্মাণ করেছেন। ফরাসি-আমেরিকান এই ভাস্কর স্বীকৃতি পেয়েছেন অনেক দেরিতে – সেজন্যই হয়তো সক্রিয় জীবনটাও তাঁর ছিল বেশ দীর্ঘ, জীবনের ছিয়ানব্বইতম বর্ষে ৩১ মে ২০১০ মৃত্যুবরণ করেন। ২৫ ডিসেম্বর ২০১১ শিল্পকলার আলোছায়ার জগত তাঁর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছে।
ছিয়ানব্বই বছর বয়সে করা তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য কাজ ‘ডোন্ট সোয়ালো মি’ প্রমাণ করে, তিনি কী অপরিমেয় জীবনীশক্তির অধিকারী ছিলেন। তাঁরই ভাষ্য – ‘একসময় উদ্বেগ আমাকে ঘিরে রেখেছে। কিন্তু আমি আকাশকে পাঠ করে জেনেছি কখন চাঁদ বেরিয়ে আসবে, সকালে কোথায় সূর্য উঠবে আর তারপরই আমি ভয়কে ঠেলে সরিয়ে দিয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমি যা বলেছি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি হচ্ছে : শিল্পই সুস্থতার গ্যারান্টি দেয়।’
প্রথম মহাযুদ্ধে শৈশব
লুইস জোসেফিন বুর্জোয়ার জন্ম ২৫ ডিসেম্বর ১৯১১, ফ্রান্সে, প্যারিসের উপকণ্ঠে। বাবা লুই বুর্জোয়া এবং মা জোসেফিন ফারো, তিন সন্তানের মধ্যমটিই অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিশ শতকের অসনাতন ও সেরা ভাস্কর। তাঁর জন্মের কবছর পর গোটা পরিবার চলে আসে প্যারিসে, বাবা ও মা অ্যান্টিক ট্যাপেস্ট্রিজ গ্যালারির মালিক ছিলেন। মেয়েরও কাজের হাতে খড়ি এখানে, দেয়াল ও টেবিলসজ্জার চিত্রিত বর্ণের ও ডিজাইনের কাপড় বেচাকেনা হতো এখানে। নিজেদের অ্যাপার্টমেন্টের যখন জীর্ণদশা, ট্যাপেস্ট্রি সজ্জায় তা ঢেকে রাখা হয়েছে। তারপরও সেকালের বিচারে যথেষ্ট বিত্তবান পরিবারেই তাঁর জন্ম।
তাঁর বয়স যখন তিন বছর, প্রথম মহাযুদ্ধ শুরু হয়। বাবাকে যুদ্ধের কারণে ফরাসি সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে রণাঙ্গনে চলে যেতে হয়। আহত অবস্থায় অচিরেই তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। মায়ের সঙ্গে দিনের পর দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁকেও হাসপাতালে যেতে হয়েছে। রক্ত, ক্ষত ও যুদ্ধ তাঁর শিশুমনে গেঁথে যায়।
যুদ্ধের পর বাবা লুই বুর্জোয়া পুরোপুরি বদলে যান – তাঁর সিদ্ধান্ত, যেভাবেই হোক জীবনটাকে উপভোগ করতে হবে। তিনি নারীলোলুপ হয়ে ওঠেন।
সন্তানদের আধুনিক ইউরোপের নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ফরাসির সঙ্গে ইংরেজিতেও পারদর্শী করে তুলতে হবে, সেজন্য স্যাদি নামের একজন মিসট্রেসকে নিয়োগ দেন। এই মিসট্রেস পরিবারের সঙ্গেই দশ বছর অবস্থান করেন এবং লুইস তাঁর সঙ্গে বাবার অনাকাক্সিক্ষত সম্পর্ক প্রত্যক্ষ করতে থাকেন। একদিকে যুদ্ধের সর্বগ্রাসী ক্ষত, অন্যদিকে দুর্বিনীত পিতার লাম্পট্য তাঁর কিশোরী মনকে তছনছ করে দেয়। মহাযুদ্ধোত্তর ফ্লু মহামারি থেকে এমফিজিমায় আক্রান্ত হয়ে জোসেফিন শয্যা নেন। বাড়িতে মিসট্রেসের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
লুইস বুর্জোয়া একাত্তর বছর বয়সে এই স্বৈরাচারী বাবার কাহিনি প্রকাশ করেন এবং প্লাস্টার, ল্যাটেক্স, কাঠ, কাপড় এবং লাল আলো ব্যবহার করে তৈরি করেন ‘ডেসট্রাকশন অব দ্য ফাদার’ – একসময় ক্ষুব্ধ সন্তানরা বুঝতে পারে সময় এসে গেছে, বাবাকে টেবিলে শুইয়ে পাট পাট করে কাটতে থাকে, বিচ্ছিন্ন করে ফেলে তাঁর শিশ্ন। বাবা খাবারে পরিণত হন, ‘আমরা তাঁকে খেয়ে ফেললাম… বাবা খতম হয়ে গেলেন, যেভাবে তিনি খতম করেছিলেন তাঁর সন্তানদের।’
শয্যাশায়ী মা, ভোগমত্ত বাবা এবং বিশ্বাসঘাতক মিসট্রেস – লুইস বুর্জোয়া মনে করেন তিনি তিন দিক থেকে বঞ্চিত। তারপরও তাঁর মনপ্রাণ মায়ের জন্যই নিবেদিত ছিল। নিজেদের ট্যাপেস্ট্রিজ গ্যালারিতে বারো বছর বয়সে তাঁর প্রথম ছবি আঁকা।
তিরিশের দশক
যুদ্ধের ক্ষত শুকিয়ে এসেছে। বিশ্বসংস্কৃতির কেন্দ্র প্যারিস বিশ ও তিরিশের দশকে প্রত্যাখ্যান করে চলেছে জরাজীর্ণ অতীত। নতুন ডাক পড়ছে শিল্পাঙ্গনে। ১৯৩২-এ লুইস বুর্জোয়া সরবোন স্কুলে ক্যালকুলাস ও জ্যামিতি পড়তে শুরু করলেন। গণিত তাঁকে মোহিত করে রেখেছে, বিশেষ করে জ্যামিতি – বিন্দু, সরলরেখা ও বক্ররেখার জাদুকরী জগৎ তাঁকে প্রশান্তি এনে দেয়। পরে তিনি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হলেন দর্শন নিয়ে – অভিসন্দর্ভ রচনা করলেন প্যাস্কাল ও ইমানুয়েল কান্টের রচনাবলির ওপর।
১৯৩৩-এ শিল্পকলার শিক্ষা নিতে চাইলেন। রিয়েলিস্টিক চিত্রধারার অনুগত লুই বুর্জোয়া এবার আর মেয়েকে সমর্থন করলেন না – আধুনিক চিত্রশিল্পী হবার দরকার নেই। তিনি বিশ্বাস করতেন, আধুনিক চিত্রশিল্পীরা সবাই অকালকুষ্মাণ্ড; অপচয়ী মানুষ।
তখন তাঁর দিন কাটছে প্যারিসে দুই শ্রেষ্ঠ শিল্পকেন্দ্র মপারনাসে এবং মমার্তের স্টুডিওতে। সেখানে ইংরেজি ভাষাভাষী শিক্ষার্থীদের জন্য দোভাষী ও অনুবাদক লাগত। লুইস একই সঙ্গে অনুবাদকের কাজ করায় তাঁর প্রদেয় বেতন ও ফি মওকুফ করে দেওয়া হয়। তিনি পল কলিন, রজার বিমেরে, অর্থন ফ্রাইস এবং বিশ্বখ্যাত রোঁদার সহকারী শার্ল দেসপিয়াওর অধীনে কাজ করেন। ত্রিমাত্রিক নির্মাণে তাঁর আগ্রহ দেখে ফার্নান্দ লেগার তাঁকে বলে দিলেন, তাঁর জন্য ভাস্কর্য, অন্য কিছু নয়।
১৯৩৮-এ তিনি সুররিয়ালিস্ট দম্পতি আঁদ্রে ব্রেতর গ্যালারি ভবনেই একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সেখানে উঠলেন – সেখানে প্রতিদিন সালভাদর দালি, পাবলো পিকাসো প্রমুখের কাজের সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ পেয়ে যান। ১৯৩৭ থেকে তিনি ভাস্কর্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ শুরু করেন। ‘আদিমতা ও আধুনিক চিত্রকলা’ নিয়ে পিএইচ-ডি করতে আসা পাণ্ডিত্যের দ্যুতিভরা রবার্ট গোল্ডওয়াটারের সঙ্গে দেখা। লুইস বুর্জোয়া এবং রবার্ট গোল্ডওয়াটার সুররিয়ালিজম এবং চিত্রশিল্পের সর্বশেষ ধারা নিয়ে আলাপ করতে করতে বিয়েই করে ফেললেন। ততদিনে হিটলারের সেনাবাহিনী মারমুখী হয়ে উঠেছে। আমেরিকানরা ইউরোপ ছাড়তে শুরু করেছেন। গোল্ডওয়াটার যখন প্রতিজ্ঞা করে বসলেন লুইসকে ছাড়া প্যারিস ত্যাগ করবেন না, তিনিও রাজি হয়ে গেলেন। শুরু হলো তাঁদের নিউইয়র্ক জীবন।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের শুরুতেই এই দম্পতি একটি যুদ্ধ-এতিম তিন বছর বয়সী মিশেল অলিভারকে দত্তক নেন। ১৯৪০ ও ১৯৪১-এ তাঁদেরও দুটি পুত্রসন্তান হয়। নিরাপদ নিউইয়র্কে চলে এলেও যুদ্ধের যাতনা তাঁকে রেহাই দেয়নি। একমাত্র ভাই পিয়েরে রণক্ষেত্রে শেলের আঘাতে জখম, মৃত্যুবরণ করেনি, কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরে আসতে পারেনি।
গোল্ডওয়াটার পড়াচ্ছেন নিউইয়র্ক সিটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুইনস কলেজে; বাড়ির ছাদে লুইস তৈরি করলেন নিজের স্টুডিও – হাতের কাছে যা পাচ্ছেন, এমনকি কুড়ানো কাঠের টুকরাও ব্যবহার করছেন – মানুষ প্রমাণ আকৃতির অস্তিত্ব সৃষ্টি করছেন। এসব কাজ প্রদর্শনীর জন্য যখন প্যারিডট গ্যালারিতে সাজানো হলো – গ্যালারির গোটা পরিসর জীবন্ত হয়ে উঠল। এ সময় ‘আমি যেসব মানুষকে ফ্রান্সে ফেলে এসেছি, তাদেরই পুনর্নিমাণ করেছি।’
বিমূর্ত শিল্পীর দলে
বিশেষ করে চিত্রশিল্পের প্রশ্নে ইউরোপ বরাবরই আমেরিকাকে হেয় চোখে দেখত। কিন্তু নিউইয়র্কের ‘অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেশনিজম’ যখন সত্যিই চিত্রকলার প্রতি মুগ্ধতার ধরনটাই পালটে দিলো, নতুন করে ছবি দেখতে শেখাল, ইউরোপ এই পরিবর্তনকে শুধু মেনেই নেয়নি, প্রভাবিতও হয়েছে। লুইস বুর্জোয়া তাঁদেরই একজন হয়ে উঠলেন – যোগ দিলেন আমেরিকান অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্টিস্টস গ্র“পে ১৯৫৪ সালে। তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে উঠল জ্যাকসন পোলক, মার্ক রথকো, ভিলেম ডি কুনিংয়ের সঙ্গে। তাঁর ভাস্কর্যও দুর্বোধ্য বিমূর্ত ধারাকে অনুসরণ করতে শুরু করল। ছবির ব্যাখ্যার জন্য শিল্পীর দ্বারস্থ হতে শুরু করল। জ্যাকসন পোলক বললেন, ছবি নিজেই নিজের ব্যাখ্যা দেবে – আর তা ঠিক বোঝার জন্য নয়, অনুভব করার জন্য। এসময়ের কাজে লুইস বুর্জোয়া মহাযুদ্ধের বিভীষিকা ও নিজের ভঙ্গুরতার মিশেল দিয়ে কাজ করতে শুরু করেন – মূলত তাঁর ভালো কাজগুলোর সূচনা তখন থেকেই। একই সঙ্গে এটাও সত্য, ১৯৫১-তে পিতার মৃত্যুর পর থেকে প্রায় দশ বছরের বেশি সময় তাঁর কেটেছে অন্ধকারে, শিল্পকলা থেকে অনেকটা সরে গিয়ে। পিতার সঙ্গে সম্পর্কটির কোনো সমাধান তিনি খুঁজে পাননি। এই দুর্ভার স্মৃতি তিনি ঝেড়েও ফেলতে পারেননি। এরই মধ্যে তিনি বইয়ের দোকান দিয়েছেন, স্কুলে পড়িয়েছেন। ১৯৬৪-তে এসে তিনি আবার নিজের শিল্পকর্ম নিয়ে, প্রদর্শনযোগ্যতা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। ১৯৬৭-তে ইতালি ঘুরে এসে মার্বেল ও ব্রোঞ্জ ব্যবহার করে কাজ করতে শুরু করেন।
১৯৫৮-তে তিনি যে, বাড়িতে ওঠেন, বিশিষ্ট পণ্ডিত রবার্ট গোল্ডওয়াটার সেই বাড়িতে ২০ মার্চ ১৯৭৩ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তখন রান্নাঘরে সকালবেলার নাশতা তৈরি করছিলেন। স্বামীর মৃত্যু তাঁর শৈল্পিক দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিক ও পারিবারিক দায়িত্বও বাড়িয়ে দেয়। সে-বছরই তিনি প্র্যাট ইনস্টিটিউট, কুপার ইউনিয়ন, ব্র“কলিন কলেজ এবং নিউইয়র্ক স্টুডিও স্কুল অব ড্রইং, পেইন্টিং অ্যান্ড স্কাল্পচারে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৮২ সালে একাত্তর বছর বয়সে নিউইয়র্ক মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে (মোমা নামে খ্যাত) একটি একক প্রদর্শনীর পরপরই লুইস বুর্জোয়ার আন্তর্জাতিক খ্যাতি এসে যায়; তিনি ভাস্কর্যের পার্শ্বসড়ক থেকে হাইওয়েতে উঠে আসেন, তাকে সামনে রেখে ফেমিনিস্ট মুভমেন্ট এগোয়, তিনি লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল এবং ট্রান্সজেন্ডারদের সাম্যের আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন দেন, এগিয়ে আসেন, এইডস রোগীদের সহায়তায়।
১৯৯০-এর দশকের শেষে নয় মিটার উঁচু স্টিল ও মার্বেলের ভাস্কর্য মামান (মাকড়সা) তাঁর মাকড়সা সিরিজের বৃহত্তম কাজটি স্থাপিত হয় লন্ডনে টেট মডার্ন গ্যালারিতে। মাকড়সা তাঁর কাছে মা জোসেফিন যে একই সঙ্গে বুনন, প্রতিপালন ও প্রতিরক্ষার প্রতীক। ১৯৫০-এর দশক থেকেই লুইস মাকড়সা সৃষ্টি করে যাচ্ছেন এবং ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে তাঁর মাকড়সা অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ২০১০ সালে তাঁর মৃত্যুর পর অবিচুয়ারিতে অধিকাংশ পত্রিকাই লিখেছে – ‘দ্য ডিপারচার অব স্পাইডার ওমেন’ – মাকড়সা রমণীর বিদায়।
লুইস বুর্জোয়া মার্বেল-ব্রোঞ্জে যেমন কাজ করেছেন, তেমনি পৌর ভাগাড়ে নিক্ষিপ্ত কাঠ, কাগজ, পুরনো কাপড় ব্যবহার করেও প্রতিকৃতি সৃষ্টি করেছেন; তাঁর ভাষায় আত্মজীবনী রচনা করেছেন। ব্রিটিশ মিউজিয়াম, টেট গ্যালারি, ব্র“কলিন মিউজিয়াম, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল গ্যালারি, কার্নেগি মিউজিয়াম, গগেনহেইম মিউজিয়ামসহ ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার শ্রেষ্ঠ গ্যালারিতে তাঁর শিল্পকর্ম সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত হচ্ছে।
জীবদ্দশায় তিনি, যখন বয়স নব্বই ছাড়িয়ে, তিনি ‘টাইটানিক খ্যাতি’ অর্জন করেছেন, তাঁর অসনাতন ভাস্কর্য ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশক ও নতুন শতকের প্রজন্মকে প্রভাবিত করেছে।
তাঁর কাজ স্বব্যাখ্যাত। মাকড়সাসহ কয়েকটি ভাস্কর্যের প্রতিকৃতি উপস্থাপন করা হলো।
৩১ মে ২০১০ তাঁর মৃত্যু হয়। শেষ কাজটিও অসমাপ্ত রেখে যাননি। নিজের পূর্ণাঙ্গ জীবনের মতোই শেষ ভাস্কর্যটিকেও মৃত্যুর আগে পূর্ণাঙ্গতা দিয়েছেন।
‘স্পাইডার ওমেনের জন্য চুম্বন’ শিরোনামে ২০০৭ সালে দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত রচনায় একালের শ্রেষ্ঠ কজন শিল্পী লুইস বুর্জোয়াকে বলেছেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ভাস্করদের অন্যতম একজন। ক্রিস্টোফার নাইট লিখেছেন, ভালোবাসা, যৌনতা ও গার্হস্থ্য বিষয় নিয়ে পুরুষ ভাস্করদের সৃষ্ট মিথ তিনি নস্যাৎ করে দিয়েছেন।
লুইস বুর্জোয়া রেখেঢেকে কথা বলেননি। শিল্পাঙ্গন ও শ্রেষ্ঠ গ্যালারিগুলোও যে এক ধরনের মাফিয়া-পরিচালিত, পঁচানব্বই বছর বয়সে তিনি অকপটে জানিয়ে গেছেন।
তাঁর কাছে শিল্প হচ্ছে সুস্থতার সংজ্ঞা, শিল্প হচ্ছে আত্মোপলব্ধির প্রকাশ।
আর তাঁর নিজের শিল্প হচ্ছে এক ধরনের পুনর্নির্মাণ। পঁচানব্বই বছর বয়সে দ্য অবজারভারের র্যাচেল কুককে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকার অনূদিত হলো। লুইস বুর্জোয়াকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে পাওয়া যাবে এই কথোপকথনে।